ঢাকা , রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫ , ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বানারীপাড়ায় দক্ষিণবঙ্গের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী শাকিলের ব্যাপারে নিরব কেন পুলিশ প্রশাসন?


আপডেট সময় : ২০২৫-০১-১৮ ১৭:৫৪:২১
বানারীপাড়ায় দক্ষিণবঙ্গের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী শাকিলের ব্যাপারে নিরব কেন পুলিশ প্রশাসন? বানারীপাড়ায় দক্ষিণবঙ্গের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী শাকিলের ব্যাপারে নিরব কেন পুলিশ প্রশাসন?




বানারীপাড়া প্রতিনিধি:

দক্ষিণবঙ্গের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী এবং হত্যা মামলার আসামি শাকিল-কে ১০ জানুয়ারি শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে বানারীপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক রুবেল হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে বানারীপাড়া উপজেলার মহিষাপোতা গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু গ্রেফতারের পরেরদিন ১১ই জানুয়ারি রোজ শনিবার এই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীকে কোনো এক অদৃশ্য কারণে ছেড়ে দেয় বানারীপাড়া থানা পুলিশ। অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় হলো, ঠিক তার দুদিন পর ১৩ই জানুয়ারী শাকিলের বিরুদ্ধে বানারীপাড়া থানায় গ্রেফতারি পরোয়ানা আসে। তার মামলা নং- ১৫১/২৪ এবং স্বারক নং-৩৭৫/২৪। কিন্তু শাকিল ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ার পরেও সে এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে ঘুরে মাদকের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এলাকাব্যাপী। শাকিল পূর্বে এবং বর্তমানে অসংখ্য মাদক মামলার আসামী এবং এলাকার চিহ্নিত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হওয়া সত্ত্বেও তার ব্যাপারে পুলিশের এই নীরব ও ভঙ্গুর ভূমিকায় জনগণের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

এর আগে গত ৫ নভেম্বর ২০২৪ইং মঙ্গলবার দুপুর ১ ঘটিকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বানারীপাড়া থানার উপ পরিদর্শক আল মামুনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকষ টিম শাকিলের বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় মাদক সম্রাট শাকিলকে বাড়িতে না পেয়ে তার স্ত্রী মুনিয়া আক্তার মীম-কে ৪কেজি গাঁজাসহ আটক করা হয়। গত ৫ই আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের পরে বানারীপাড়া সহ সারা দেশে প্রশাসনের অবস্থান তৎপর না থাকায় সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বানারীপাড়ায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী শাকিল ও তার সহযোগীদের মাধ্যমে উপজেলার বন্দর বাজার সহ আশেপাশের এলাকায় গড়ে তুলেছেন মাদকের রমরমা ব্যবসা। এলাকাবাসীরা জানান, পুরনো আশ্রয়নে সকাল ০৮টা থেকে রাত ১২টা অবধি শাকিলের নেতৃত্বে মাদক বিক্রয় হয় এবং রাত ১২টার পরে পুরনো আশ্রয়নের একটি কক্ষে বসে তারা মাদক সেবনের পাশাপাশি সারাদিনের ক্রয়-বিক্রয়ের হিসাব নিকাশ করেন। তারা আরো জানান, শাকিল ও তার স্ত্রীসহ, শাকিলের শ্বশুর, শাশুড়ি সবাই এই মাদক ব্যবসার সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত।  

এলাকাবাসী গনমাধ্যমকে জানান, বানারীপাড়া উপজেলার আফসের হোসেনের ছেলে শাকিল, আনোয়ারের ছেলে টিটু, বাইশারী ইউনিয়নের জামাল বালি, গুয়াচিত্রার সাব্বির, পশ্চিম চাখারের রুবেল, জম্বুদ্বীপের আবুল এই মাদক ব্যবসার ডিলার হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে শাকিল যাদেরকে দিয়ে খুচরা মাদক বিক্রি করায় তারা হলো, খেজুরবাড়ির সুমন, আবাসনের মামুন, পৌরসভা আবাসনের আঃ হকের ছেলে রাজু, কলেজ মোড়ের ন্যাভাই রাসেল ও মিঠু, ধারালিয়া জুল আসফিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন বাবুলের ছেলে সজল। প্রসঙ্গত, উপজেলার পুরনো আশ্রয়ন হচ্ছে শাকিল এর মাদক ব্যবসার হেডকোয়ার্টার। আবাসনের খবিরের দোকান, তিন রাস্তার মোড়, মহিষাপোতার হালিমের দোকান মাদকের আখড়া হিসেবে পরিচিত।

শাকিল কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক ও কিছু প্রশাসনিক ব্যক্তিদের লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে তার মাদকের ব্যবসা কোনো ঝামেলা ছাড়াই চালিয়ে যাচ্ছে৷ প্রশাসনের নজর এড়াতে শাকিল মাদক সেবনকারীদের নিকট মোবাইলফোনে অর্ডার নিয়ে মাদক বিক্রি করেন। তবে যে কেউ ফোন করে চাইলেই  মিলবে না মাদক। বরং এক্ষেত্রে মাদক পেতে হলে তার নিয়মিত একজন খরিদ্দারের সুপারিশের প্রয়োজন হবে। স্থানীয় বাসীন্দারা একাধিকবার মাদক নির্মূলের উদ্যোগ নিলে তাদের উপর চড়াও হয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে শাকিল ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা। তাদেরকে মাদক বিক্রি করতে নিষেধ করলে উল্টো বিভিন্ন হুমকি দিয়ে মার মূখী আচারন করে মানুষের সাথে।

মাদকের এই সহজলভ্যতার কারণে এলাকার তরুণ যুব সমাজের উপর এর অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব পরছে। হাতের নাগালে সহজেই মাদক পেয়ে অত্র এলাকায় দিনদিন মাদক সেবীদের সংখ্যা ভয়ঙ্করভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরবর্তীতে এরা নেশার টাকা জোগাড় করতে জড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের অপরাধ ও অপকর্মে।
বিষয়টির দিকে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অতীব জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী।



 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ